যশোর জার্নাল ডেস্কঃ
খুলনা নগরীর ময়লাপোতা ও শিববাড়ি এলাকায় কেএফসি, ডোমিনোজ পিজা ও বাটার শোরুমে চালানো হামলা ও লুটপাটের ঘটনায় বন্ধ হয়ে গেছে প্রতিষ্ঠানগুলো। ব্যাপক ভাঙচুর ও ক্ষয়ক্ষতির পর এখন পর্যন্ত সেগুলো আবার চালুর কোনো সম্ভাবনার কথা জানাতে পারেননি সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
প্রত্যক্ষদর্শী ও কর্মচারীদের বরাতে জানা গেছে, হামলায় কেএফসির খাবার লুট করে কিছু বাইরে ফেলে দেওয়া হয়। ভেঙে ফেলা হয় সাইনবোর্ড, চেয়ার-টেবিল, ক্যাশ কাউন্টার, টিভি, এসি, ফ্রিজসহ অন্যান্য সামগ্রী। ক্যাশ কাউন্টার থেকেও টাকা নিয়ে যায় হামলাকারীরা। ২৫ জন কর্মীকে নিয়ে পরিচালিত প্রতিষ্ঠানটি এখন সম্পূর্ণ অচল।
একই ভবনের নিচতলার ডোমিনোজ পিজা রেস্টুরেন্টেও একইভাবে ভাঙচুর চালানো হয়। সেখানে কর্তব্যরত কর্মচারীরা জানান, তারা এখন সম্পূর্ণ অসহায় অবস্থায় রয়েছেন। প্রতিষ্ঠানটির ম্যানেজার মো. আলামিন জানান, কয়েক কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে এবং কবে পুনরায় চালু করা যাবে তা অনিশ্চিত।
তৃতীয় তলায় থাকা বেসরকারি সিটি মেডিকেল কলেজের ডেন্টাল বিভাগের কাঁচের দরজা-জানালাও ভাঙচুর করা হয়। পাশাপাশি ডাচ-বাংলা ব্যাংকের বুথে লুটের চেষ্টা চালানো হলেও সফল হয়নি।
শিববাড়ি মোড়ে অবস্থিত বাটার শোরুমেও একই ধরনের হামলা হয়। ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, সামনের অংশ ত্রিপল দিয়ে ঢেকে রাখা হয়েছে। ভিতরে ভাঙা কাঁচ, তছনছ করা আসবাব ও ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা পণ্যসামগ্রী চোখে পড়ে। ব্রাঞ্চ ম্যানেজার তৌহিদুল ইসলাম জানান, প্রায় ৯০ থেকে ৯৫ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে এবং তারাও মামলা করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশ রাতভর অভিযান চালিয়ে ৩১ জনকে আটক করেছে, যাদের সোনাডাঙ্গা থানায় রাখা হয়েছে। তবে আটককৃতদের মধ্যে নিরীহ ব্যক্তিদেরও অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন তাদের পরিবার।
ছোট বয়রা এলাকার মনির হোসেন বলেন, “আমার ছেলে হৃদয় অষ্টম শ্রেণির ছাত্র। সে দাদা বাড়ি থেকে ফেরার পথে নিউমার্কেট এলাকা থেকে পুলিশ তাকে ধরে নিয়ে গেছে।” একই অভিযোগ করেন আমির হোসেন নামের আরেক অভিভাবক, যার ছেলে ইরফানও অষ্টম শ্রেণিতে পড়ে। খালপাড় এলাকার রিকশাচালক আশরাফুলকেও বিনা কারণে আটক করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে তার পরিবার।
তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন সোনাডাঙ্গা থানার ওসি মো. শফিকুল ইসলাম। তিনি বলেন, “ভিডিও ফুটেজ ও সিসিটিভি বিশ্লেষণ করেই অভিযান চালানো হয়েছে। নিরীহ কাউকে আটক করা হয়নি।”
খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মো. জুলফিকার আলী হায়দার জানান, “ছবি ও ভিডিও দেখে জড়িতদের শনাক্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।”
উল্লেখ্য, গত সোমবার সন্ধ্যায় ইসরায়েল বিরোধী বিক্ষোভের পর ‘বিক্ষুব্ধ জনতা’ ময়লাপোতা মোড়ে কেএফসি ও ডোমিনোজ পিজা, এবং পরে শিববাড়ি মোড়ে বাটার শোরুমে হামলা চালায়।